সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৫

কে মালাউন তা বিচার করার তুমি কে

বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষ
মালাউন শব্দের সাথে পরিচিত।
সাধারনত এটা আমরা ব্যাবহার করি
হিন্দুদের বোঝাতে। বিষয়টা এরকম
যেহেতু তুমি হিন্দু,সেহেতু তুমি
মালাউন।
ছোট বেলা থেকে আমিও এই শব্দটার
সাথে পরিচিত।তখন মালাউন শব্দের
অর্থটা বুঝতাম না। মনে করতাম এটা
বোধ হয় হিন্দুদের আর একটা নাম।শব্দটার
অর্থ না জানলেও শব্দটা শুনলে আমার
গায়ে খুব লাগতো।সম্ভবত ক্লাস ফোর এ
পড়ার সময় কেউ আমাকে মালাউন
বলছিলো।আমি কোন জবাব না দিলেও
আমার এক ক্লাসমেট(সম্ভবত
শিরিন)তাকে বলছিলো বিপ্লব
মালাউন হয় কি করে ও তো হিন্দু।
আসলে তার(সম্ভবত শিরিন) কথার
পেছনে যে বিশাল ব্যাখ্যা ছিলো
তখন না বুঝলেও অনেক পরে বুঝেছি।
মালাউন শব্দটি আরবী শব্দ " ﻣﻠﻌﻮﻥ "
থেকে উদ্ভূত যার অর্থ অভিশপ্ত বা
ঈশ্বরের অভিশাপপ্রাপ্ত। ১৯৪৭ সালে
দেশ বিভক্ত হওয়ার সময় বাংলাদেশর
নোয়াখালী অঞ্চলের হিন্দুদের
মালাউন বলে গালি দেওয়া হতো।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশীদের
”মালাউন কা বাচ্চা” বলে গালি
দিয়েছিল পাকিস্তানিরা, ইতিহাস
সেই কথায় বলে।
এখন প্রশ্ন হলো হিন্দুরা কি করে
মালাউন হয়? হিন্দুরা তো ঈশ্বর
বিশ্বাসী।তারা ধর্মকে,ঈশ্বরকে
অন্ধের মতো বিশ্বাস করে।তার প্রমাণ
হিসাবে বলা যায়, হিন্দুরা ১২ মাসে
১৩ টা পূজা করে(বচন)।আর হিন্দুরা যে
ঈশ্বর কতৃক অভিশপ্ত তা তুমি জানলে কি
করে? সেটা তো ঈশ্বর ছাড়া আর কারও
জানার কথা ছিলো। কে মালাউন তা
বিচার করার তুমি কে?
তোমার কথা মানলে তো বিষয়টা এমন
দাড়ায় যে তুমি আমাকে মালাউন
বলেছো বলে আমিও তোমকে মালাউন
বলবো। কিন্তু আমি কখনোই সেটা
বলবো না । তুমি অধম বলিয়া, অমি উত্তম
হবো না কেনো?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন